Halloween : শুধুই কি মজা?

সে বছর আমি সদ্য আমেরিকাতে এসেছি।উঠেছি এক বাঙ্গালী পাড়ার মাঝে। মানে উপরে, নিচে, ডানে বামে সব দিকে ছিলো বাঙ্গালী। প্রতিবেশী এক আপু বিশাল একটা মিষ্টি কুমড়া কিনেছেন। একদম ঢাউশ সাইজ। সবাইকে ভাগ দিয়ে বেড়াচ্ছেন। জানালেন এই সময়টাতে অনেক ছাড় পাওয়া যায় মিষ্টি কুমড়াতে। আমি তখন Halloween এর ব্যাপারে একদম খ্যাত, মানে কিছুই জানিনা। যদিও অ্যামেরিকান প্রতিবেশীদের বাসায় দেখছিলাম যে বাসার বাইরে মিষ্টি কুমড়া দিয়ে ডেকোরেট করা……আগা মাথা কিছুই বুঝতেছিলাম না। তবে একটা জিনিস মনে হয়েছিলো যে এই দেশে উৎসব উদযাপনের জন্য যা লাগে সেটা যেন সবাই কিনতে পারে সেজন্য ছাড় দেয়া হয়, আমাদের দেশের মত রোযা, ঈদের সময় জিনিসের দাম বেড়ে যায় না। এইটা একটা ভালো দিক।
যাই হোক, সেই বছরই আপাদমস্তক কালো, বেশ ঢিলাঢালা বোরখা পরে গিয়েছি Wallmart এ বাজার করতে। সেখানে এক লোক আমাকে দেখে হেসে বললো Halloween Costume? Nice! আমার তো যাকে বলে চক্ষু ছানাবড়া! খুবই মেজাজ গরম হয়েছিলো, কিন্তু কিছু বলি নি। সেইদিনই বাসায় আসার পরই রাত ৮-৯টার দিকে আমার প্রতিবেশী কিছু বাঙ্গালী দরজায় নক করলো। দরজা খুলতেই তারা সানিয়া আপুউউউ বলে একটা চিৎকার দিলো, আমি একটু পিছিয়ে গেলাম, সামনে তাকিয়ে দেখি ভয়ংকর মুখোশ পরা একাধিক চেহারা। আমাকে ভয় দেখাতে এসেছে। পরে লক্ষ্য করলাম যে ফেসবুকের হোমপেইজে পরিচিতরা প্রায় সবাই Halloween Costume পরা ছবি পোস্ট করছে- Halloween Fun এমন নানা ধরণের ট্যাগ দিয়ে। এসব ব্যাপারে আমি বরাবরই একটু ব্যাকডেটেড আর রসকসহীণ টাইপ। এইসব কুৎসিত দর্শন মুখোশ পরা আর মানুষকে ভয় দেখানোর মাঝে কী ফান থাকতে পারে সেটা আমার বুঝে আসতো না, সত্যি বলতে কী আমার কেমন যেন গা গুলাতো।
আস্তে আস্তে সময় গড়ালো, এই উৎসবের উদযাপনের সাথে আরো পরিচিত হলাম। ৩১শে অক্টোবরের আগে সমস্ত স্টোরগুলোতে Halloween এর পোশাক, মুখোশ এগুলো সাজানো থাকতো, আমেরিক্যান প্রতিবেশীদের দেখতাম বাসার বাইরে ঢাউশ সাইজের মিষ্টিকুমরার সাথে নানা ধরণের কংকাল, শয়তানের চিহ্ন, বিমূর্ত জিনিসপাতি যা দেখলেই কেমন যেন গা ছমছম করতো।
উদযাপনের ব্যাপকতা দেখে আমার কৌতূহলী মন এগুলোর মানে বুঝতে চাইলো। আজকাল যেহেতু উৎসবটা ভৌগোলিক সীমানার দ্বার অতিক্রম করে ছড়িয়ে পড়েছে আমাদের দেশেও, বিশেষ করে ইংলিশ মিডিয়াম শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে, তাই এটা নিয়ে পড়াশোনা করে যা বুঝলাম সেটা আজকে সংক্ষেপে তুলে ধরার চেষ্টা করবো ইনশাল্লাহ।
Halloween শব্দের উৎপত্তি All Hallows Eve শব্দটি থেকে। এটার অর্থ ‘পবিত্র সন্ধ্যা ’। প্রায় দুই হাজার বছর আগে ইংল্যান্ড ,আয়ারল্যান্ড ও উত্তর ফ্রান্সের Celtic religion এ বিশ্বাসীরা নববর্ষ পালন করতো ১লা নভেম্বর। ৩১ অক্টোবর সন্ধ্যায় তারা গ্রীস্মকালকে বিদায় জানিয়ে শীতকালকে স্বাগত জানাতো। তারা বিশ্বাস করতো যে এই দিন ইহলৌকিক ও পারলৌকিক- এই দুই জগতের মধ্যবর্তী প্রাচীর বিলুপ্ত হয়ে যায়। ফলে মৃত ব্যক্তির আত্মারা পৃথিবীতে ঘুরতে আসে। ফেরৎ যাওয়ার সময় তারা তাদের প্রিয়জনকে সাথে নিয়ে যেতে চায়। এই রাতটি তাই একটি ভয়ের রাত। মূলত এসব মৃত আত্মার দ্বারা সম্ভাব্য জান-মালের ক্ষতি এড়ানোর জন্য তারা পাহাড়ের চূড়ায় আগুন জ্বালিয়ে রাখতো এবং নিজেরা ভয়ংকর পোশাক ও মুখোশ পরে ঘুরে বেড়াতো। তারা ভাবতো তাদের এই ভয়ংকর বেশ কিংবা বাসার সামনে প্রেতাত্মার মুখের আদলে কেটে রাখা মিষ্টিকুমড়া, তার ভিতরে জ্বলতে থাকা বাতি মৃতদের আত্মারা পালিয়ে যাবে কিংবা কে কোন জন সেটা চিনতে পারবে না। Halloween উদযাপনের মূল থিম তাই Treat and Trick. মানে মৃত আত্মাদের Treat দেয়া যেন তারা খুশী থাকে, কোনো ক্ষতি না করে, কিংবা Trick করা, মানে চাইলেও ক্ষতি যেন করতে না পারে।
এখন এসব বিশ্বাস যে ইসলামের সাথে সম্পূর্ণ সাংঘর্ষিক সে ব্যাপারে তো কোনো সন্দেহ নেই। মৃত্যুর পর আত্মার সাথে এই দুনিয়ার সম্পর্ক সম্পূর্ণরূপে বিছিন্ন হয়ে যায়। আর আল্লাহ ছাড়া অন্য কোনও সত্তার পক্ষে মানুষের সুরক্ষা/ ক্ষতি করা সম্ভব নয়। তাই Halloween উদযাপনের উৎপত্তিগত বিশ্বাসগুলো নিঃসন্দেহে শিরকের অন্তর্ভূক্ত। কিন্তু এগুলো কিছু না বিশ্বাস করে এমনিই যদি কেউ Fun হিসেবে করে? বড়রা কিংবা বাচ্চারা যদি স্রেফ এসব পোশাক/ মুখোশ পরে ভয় দেখাতে চায়?
এটা নিয়ে কথা বলার আগে আমি নিজের কিছু উপলব্ধি শেয়ার করতে চাই। আমার ছোটবেলা কোনো ঠাকুরমার ঝুলির রাক্ষস ক্ষোক্কস বা সিন্ড্রারেলা টাইপের রূপকথা পড়ে কাটেনি। আমার আব্বা আমাকে ঘুমানোর আগে নবী রাসূলদের নানা কাহিনী শুনাতেন…আমার ছোটবেলা তাই এক কথায় বাস্তবধর্মী ছিলো। সেজন্য কী না জানি না, বড় হয়েও ভুতের গল্প আমাকে কখনো টানেনি। আত্মহত্যা করলে বা অপঘাতে মারা গেলে সেই অতৃপ্ত আত্মারা আমাদের চারপাশে ঘুরে বেড়ায়, তাদের সৎকার করলে আর ডিস্টার্ব করে না এই টাইপের গল্পগুলো যখন ভারতীয় লেখকদের বইতে পড়তাম তখন অবধারিতভাবে আমার মনে হত এগুলো হিন্দুদের বিশ্বাস, ওদের কালচার। এর বহু বছর পর আমি যখন ইসলাম নিয়ে পড়াশোনা করেছি, The world of jinn and devils made perfect sense to me. আমাদের চারপাশে নানা অলৌকিক ঘটনা কিভাবে ঘটে, জ্যোতিষীরা কিভাবে ভবিষ্যৎ বলে, কোয়ান্টাম মেথড বা এগুলোর একদম পরের ধাপগুলোতে যে জ্বীনের সাহায্য নিয়ে মানুষকে ফাঁদে ফেলা হয়, এগুলো আমি খুব সহজে বুঝেছি আলহামদুলিল্লাহ। আমি বিশ্বাস করি আমাদের চারপাশে বহু শিরকের দরজা বন্ধ করতে হলে এই অদৃশ্য জগতটা নিয়ে মানুষের ব্যাসিক জ্ঞান থাকাটা একদম আবশ্যক। কিন্তু অদ্ভূত ব্যাপার হল সামনাসামনি প্রতিবেশীদের মাঝে হোক আর অনলাইনে হোক, যখনই আমি world of jinn and devils নিয়ে ক্লাস নিতে চেয়েছি, আমি অধিকাংশ শ্রোতাদের মাঝে এক ধরণের অনীহা দেখেছি। তারা বলতো তাদের ভয় লাগবে, রাতে ঘুমাতে পারবে না ইত্যাদি।
আমি অবশ্যই এই দাবী করবো না যে ছোটবেলায় যারা রাক্ষস ক্ষোক্কসের গল্প পড়ে বড় হয়েছে তারাই জ্বীনজগত সম্পর্কে জানতে অনাগ্রহী ছিলো, কিন্তু আমি খুব দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি যে ছোটবেলায় আমরা যা পড়ি বা যা করি তার একটা Life long impact থাকে। আমাদের জীবনে তো যা হয়েছে হয়েছে, কিন্তু আমাদের বাচ্চারা কিসে মজা পাবে আর কিসে ভয় পাবে এইটা গড়ে দেয়ার দায়িত্বটা কিন্তু আমাদের, অন্তত মুসলিম মা বাবার, যারা আমরা চাই আমাদের বাচ্চারা বুঝে শুনে ইসলাম পালন করুক।
মনে হতে পারে যে এসব কথার সাথে Halloween উদযাপনের কী সম্পর্ক।
আছে।
গভীর সম্পর্ক আছে।
প্রথমত, Halloween এর দিনে যেসব মুখোশ ও পোশাক ব্যবহার করা হয় তা যে কারো মনে বিবমিষার অনূভূতি সৃষ্টি করাটাই স্বাভাবিক। এসব জিনিস গায়ে চরিয়ে কাউকে ভয় দেখানোর মাঝে আদতে মজার কিছু নেই। কিন্তু ছোটবেলা থেকে প্রতি বছর বাচ্চারা যদি এসব পোশাক ও মুখোশ পরিধানে অভ্যস্ত হয়ে যায় এবং এসব কাজ করাটা তাদের জন্য আনন্দের খোরাক হতে থাকে তাহলে তারা এমন কিছুতে আনন্দ পাবে যেটাতে আসলে খুব দুঃখ বা কষ্টকর অনুভূতি হওয়ার কথা ছিলো।
একটা উদাহরণ দিলে ব্যাপারটা হয়ত ক্লিয়ার হবে। এবারের রামাদ্বানে আমি মাসজিদের যে সেকশনে নামায পড়েছি সেটা ছিলো এক্সক্লুসিভলি বাচ্চাদের মায়েদের জন্য নির্ধারিত। সেখানে মায়েদের সাথে ৮-৯ বছরের বেশ কয়েকটা বাচ্চা আসত। মায়েরা নামাযের সময়টা মোবাইল দিয়ে ওদের ব্যস্ত রাখত। আমি খেয়াল করে দেখলাম যে ওরা পুরাটা সময় মোবাইলে গেম খেলে না হয় সেলফি তুলে সেই ছবিকে কোনো একটা অ্যাপ দিয়ে এডিট করে সেটা দেখে খিলখিল করে হাসে। ব্যাপারটাতে আমার খুব অবাক লাগছিলো কারণ এডিট করা ছবিগুলা অধিকাংশ ক্ষেত্রেই খুব বিকৃত হত। ওটা দেখে হাসি আসা তো দূরের কথা, ভয়ে গা শিউরে ওঠা উচিৎ। আমি চিন্তা করছিলাম যে এই বাচ্চাগুলো যদি রাস্তায় কাউকে দেখে যে গণপিটুনি খেয়ে পড়ে আছে কিংবা অসুস্থ বা অসহায় তাহলে তাদের কাছেও কি ব্যাপারটা ফানি লাগবে? নিজের সহপাঠী বা আত্মীয় কাউকে পিটিয়ে ভর্তা করে তারা কি মজা পাবে? আবরারের খুনীদের মত?
কিংবা চিন্তা করুন ফেসবুকে ফেস অ্যাপ দিয়ে নিজের বর্তমান চেহারাকে পরিবর্তন করে বৃদ্ধ বয়সের চেহারা বানানোর ব্যাপারটাই। সুস্থভাবে চিন্তা করলে বৃদ্ধ বয়সে কারও চেহারাই দৃষ্টিসুখকর থাকে না। চুল সাদা হয়ে যায়, চোখ, গালের চামড়া কুঁচকে যায়, দাঁত পড়ে যায়। এই বয়সের অসহায়ত্ব আসলে আল্লাহর এক নিদর্শন যেটার কথা আল্লাহ কুরআনে উল্লেখ করেছেন। আজকের বৃদ্ধ কাউকে দেখে আমাদের নিজেদের এহেন পরিণতির কথা ভেবে আমাদের ইগো বিসর্জন দেয়া উচিৎ, মৃত্যুমুখী জীবন যাপন করা উচিৎ। কিন্তু এমন চেহারা দেখে যদি তরুণ প্রজন্মের মধ্যে আনন্দের অনূভূতি জন্মে তাহলে তাদের মাঝে কি কোনো গঠনমূলক পরিবর্তন আসবে?
দ্বিতীয়ত, যতই বিষয়গুলোকে fun হিসেবে উপস্থাপন করা হোক না কেন, এভাবে উৎকট দর্শন মুখোশ আর পোশাক পরে উদযাপন করতে থাকলে শিশুদের মনে অজান্তেই অদৃশ্য জগত সম্পর্কে এক ধরনের ভুল ধারণা তৈরি হতে থাকবে। এরপর আমরা যখন তাদেরকে ইসলামের ‘বাস্তব অথচ অদৃশ্য সত্তা’ যেমন শয়তান, ফেরেশতা, জ্বীন সম্পর্কে ধারণা দেব তখন হয়তো তারা এদেরকেও funny character হিসেবে চিন্তা করা শুরু করবে। ধরেন আপনি আপনার বাচ্চাকে কবরের প্রশ্নোত্তরের ব্যাপারে ধারণা দিচ্ছেন যেখানে বলা হয়েছে মুনকার নাকীরের কথা। কিংবা মৃত্যুর আগে অবিশ্বাসীদের জান ক্ববজ করতে যেসব ফেরেশতা আসবে তারা যে খুবই ভয়ংকর দর্শন হবে সেটা জানাচ্ছেন। দেখা যাবে Halloween উদযাপনে অভ্যস্ত আপনার সন্তান আপনাকে জিজ্ঞেস করছে আমার অমুক মুখোশটার মত দেখতে হবে আম্মু? That’s funny! I can handle that!
তখন কী বলবেন আপনি?
আমি আসলে নিজের চোখে দেখেছি রক মেটালের Devil Worship এর গান শুনে কিভাবে বাচ্চারা Lucifar, Satan কে ভালোবাসতে শুরু করে, আমি জানি বিভিন্ন ধরণের ভিডিও গেমস যেখানে Fireball দিয়ে খেলতে হয় সেগুলো খেলে অভ্যস্ত বাচ্চারা জাহান্নামের বর্ণনা শুনে কিভাবে সেটাকে ছেলেখেলা মনে করে, কিভাবে কার্টুনগুলোতে সবসময় দারুণ শক্তিমান চরিত্রকে এক চোখা করে দেখানো হয় যাতে দাজ্জাল যখন আসবে তখন খুব সহজেই তার কর্তৃত্ব মেনে নিতে পারে ………The list can go on and on.
আমার কথাগুলো শুনে অনেকেরই হয়তো আমাকে conspiracy Theorist মনে হবে যে বিশ্বাস করে আমাদের বাচ্চাদের নষ্ট করার সবরকম চেষ্টা নন-মুসলিমরা করছে। কিংবা অপ্রয়োজনীয় রকমের সিরিয়াস, Overthink করা কেউ। আবার হয়তো এটাও মনে হতে পারে যে ইসলাম একটা কঠোর ধর্ম যেটা পালন করতে গেলে জীবন থেকে সব আনন্দ ফূর্তি উধাও হয়ে যায়।
হয়তো সত্যি, হয়তো না। আল্লাহই ভালো জানেন, কিন্তু আমি শুধু বুঝি আমার সন্তান এমন অদ্ভুত, Baseless কাজকর্ম করে মজা পাক এটা আমি চাই না। আমি চাই আমার, আমাদের বাচ্চারা যেন আল্লাহর আনুগত্য করে ও আল্লাহর অবাধ্যতা থেকে দূরে থাকার মাধ্যমে এক অপার্থিব আনন্দ খুঁজে পাক।
Last but not the least, Halloween এর দিনে বাচ্চাদেরকে বাড়ি বাড়ি গিয়ে চকলেট সংগ্রহ করতে পাঠানোর যে কালচার গড়ে উঠেছে তাকে আজকাল পশ্চিমা মিডিয়াই নিরুৎসাহিত করে। কারণ অবিশ্বাস্য হলেও শয়তানের সত্যিকারের পূজারী আজো আছে যারা এই দিনে ওৎ পেতে থাকে এভাবে একা বাচ্চাদের নাগাল পাওয়ার জন্য। অনেক দুর্ঘটনা ঘটে এইসময়। বাচ্চাদের বলি দেয়ার, যৌন নির্যাতন করার ইত্যাদি নানা অপরাধ এই সময়ে ঘটে। তাই নিতান্ত দুনিয়াবী কারণেও আমাদের আর একটু সচেতন হওয়া উচিৎ এটা নিয়ে।
আবারো বলছি আমি conspiracy Theorist নই। অমুক ইহুদীদের ষড়যন্ত্র তমুক নাসারাদের, এমন কথা বলা আমি ভয়ংকর রকম অপছন্দ করি। এগুলোকে পরাজিত মানসিকতা ভাবি। কিন্তু তারপরও আমার কেন যেন মনে হয় নন- মুসলিমরা তাদের সব ধর্মীয় উদযাপনের মাঝে একটা বাচ্চাদের উপযোগী অনুষঙ্গ তৈরি করে রাখে যেন এটা বাচ্চাদের জন্য খুব আনন্দের হয়। ধরুন ক্রিস্টমাসের ক্ষেত্রে সান্টা ক্লস, ইস্টারের সময় এগ হান্টিং। এভাবে ওরা ধীরে ধীরে তাদের ধর্মীয় উদযাপনের প্রক্রিয়াগুলোকে এমন নিষ্পাপ fun হিসেবে উপস্থাপন করা যে; সব ধর্মের শিশুরাই নির্দ্বিধায় এসব fun activities এ অংশ নিতে উৎসাহ বোধ করে। শিশুদের involve করার মাধ্যমে ধর্মীয় সব ব্যাপারগুলাকেই তাদের কাছে স্রেফ fun। তাতে যে জিনিসটা আমি সবচেয়ে ভয় করি তা হল একটা চিন্তা না করা প্রজন্ম গড়ে ওঠা। ছোটবেলায় না হয় বাচ্চাদের হাবি জাবি বুঝানো যায় কিন্তু বড় হয়ে মা বাবা হয়েও সে সান্টা ক্লজ এসে ক্রিসমাস গিফট দিয়ে যায় এমন আজগুবি জিনিস বাচ্চাদের শিখায়। Halloween এর Just for fun এর ক্ষতিকর প্রভাব বুঝতে হবে তাই আমাদের নিজেদের একটু চিন্তাশীল হতে হবে। এই কথাটা আমি আজকাল খুব বলি………আসুন নিজে চিন্তা করি, অন্যকে চিন্তা করতে উৎসাহিত করি। একটা উদ্দেশ্যবাদী প্রজন্ম তৈরি হবে তাইলে ইনশাল্লাহ, হুজুগে গা ভাসানো না।
আল্লাহ আমাদের, আমাদের সন্তানদের চিন্তাশীল করে গড়ে তুলুন যারা বুঝে শুনে ইসলাম পালন করে। আমীন।
Hamida Mubasshera's Blog
- Hamida Mubasshera's profile
- 16 followers
